রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের খলাগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের উপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুয়া ফেইসবুক আইডি তৈরী করে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে একটি হিন্দু পরিবারের উপর হামলা ও বাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে একটি কুচক্রী মহল। বুধবার (১৫ জুন) উপজেলার খলাগাঁও গ্রামে দিপ চন্দ এর বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। জানাযায়, খলাগাঁও গ্রামের দুলন চন্দের পুত্র দিপ চন্দের নামে একটি কুচক্রী মহল ভুয়া ফেইসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্ম অবমাননা হয় এরকম ছবি ও লেখা পোষ্ট করে। এ লেখাকে কেন্দ্র করে মুন্সীবাজার আওমীলীগ নেতা ছালেক মিয়ার নেতৃত্বে শতাধিক লোকের মিছিল নিয়ে এসে বাড়ি ঘর ভাংচুর করে ও আগুন ধরিয়ে দেয়। অগ্নি সংযোগের ঘটনার সময় পুরুষরা বাড়িতে না থাকায় মহিলা শিশু রক্ষা পেলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায় কয়েক লাখ টাকার। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানাযায়, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত ও দুলন চন্দের পরিবারের সাথে আওয়ামীলীগ নেতার দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত ঝামেলা চলছে। প্রত্যেক্ষদর্শী সূত্র থেকে জানাযায়, মুন্সীবাজারে স্থানীয় প্রভাবশালী সন্ত্রাসী আওয়ামীলীগ নেতা ছালেক মিয়ার দোকানের পাশে বন্যা ষ্টোর নামে দুলন চন্দের একটি দোকান ছিলো। ঐ দোকানটি জোর পূর্বক নাম মাত্র টাকায় ক্রয় করতে চেয়েছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা ছালেক মিয়া ও তার ভাই জুনেদ মিয়া। দোকান বিক্রি করতে না চাওয়াতেই সংখ্যা লঘু পরিবারের উপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন। তারা ছলে বলে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে দুলন চন্দ ও তার পরিবারের উপর। পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাতে তাদের নিকট সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দেওয়ায় ছালেক মিয়া তার ভাই জুনেদ মিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ১৮ সালের ২১ জুলাই দোকানে হামলা চালায়। এ ঘটনায় দিপ চন্দ ও তার পিতা সহ ৬জন আহত হন। পরবর্তীতে ১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রাক্ষচারী মন্দিরে পাদুকা উৎসবে আওয়ামীলীগ নেতা ছালেক মিয়া তার ভাই জুনেদ মিয়া, আরো সন্ত্রাসী ছমির মিয়া, সেলিম মিয়া,ময়না মিয়া কীর্তন বন্ধ করতে এসে হামলা চালায়। তাদের সন্ত্রাসী হামলায় দিপ চন্দ ও তার পিতা দুলন চন্দ,নিন্টু চন্দ,রিপন চন্দ,ঝিন্টু, শ্যামল দাস সহ আনেক আহত হন। এ ঘটনায় রাজনগর থানায় মামলা হলেও মামলায় অগ্রগতি হয়নি। এলাকার নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, ২০২০ সালে মুন্সিবাজারে ১ মে দিবস পালন কালে আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় কিছু লোক দিপ চন্দের দোকানে আশ্রয় নেওয়ার অজুহাতে ২ টি পিস্তল ও ২ রাউন্ড গুলি রেখে তাকে গ্রেফতার করানো হয়। পরবর্তীতে ২১ সালের ৫ আগষ্ট দিপ চন্দের সবজি খেতের জমি ছালেক মিয়া ও তার ভাই জুনেদ মিয়া মিলে দখল করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় দিপ চন্দ ও তার পিতা দুলন চন্দ মারাত্নক ভাবে আহত হন। পরে তাদের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি করা হলে সেখানেই দুলন চন্দ মৃত্যু বরন করেন। এভাবে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর মুন্সীবাজারের আওয়ামীলীগ নেতা ছালেক মিয়া নির্যাতন চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নানা সময় নামে বেনামে মোবাইলে ফোন করে দিপ চন্দ কে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে এবং সরাসরি তাদের প্রানে মারার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসী মহল এমনটা দাবী করেছেন তার পরিবার। বর্তমানে অসহায় পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।